Sammo

০১ জানুয়ারি ১৯৭০ ১২:০০


বিভাগ: চিকিৎসাবিজ্ঞান

পড়ার সময়: ২ মিনিট


জ্বরে মানুষ প্রলাপ বকে কেন?


একজন সুস্থ মানুষের শরীরের সাধারণ তাপমাত্রা ৩৬-৩৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড কিংবা ৯৮-১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। তাপমাত্রা এর চেয়ে বেশি হলে, গা ছ্যাঁকছ্যাঁক করতে শুরু করলে, তাকে জ্বর বলা যায়। কিন্তু জ্বর কেন হয়? মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সুবীরকুমার মণ্ডল বলছেন, ‘‘মানুষের শরীরের মধ্যে মেটাবলিজ়ম চলাকালীন যে ক্রিয়া-বিক্রিয়া চলতে থাকে, তা থেকেই বাড়তে পারে শরীরের তাপমাত্রা। সুস্থ মানুষের সাধারণ ও স্বাভাবিক তাপমাত্রার চাইতে যদি তা বেড়ে যায়, তখনই তাকে জ্বর বলা চলে। তবে এই ক্রিয়া-বিক্রিয়ার ফলে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণ কিন্তু নানা কিছু হতে পারে।’’

সব মানুষের শরীরের তাপমাত্রাই এক হয় না। হয়তো কারও গায়ে হাত দিলে জ্বর জ্বর ভাব মনে হচ্ছে। পরে দেখা গেল, তাঁর শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রাই সেটা। তাই কারও তাপমাত্রা বেড়েছে মানেই যে জ্বর, তা না-ও হতে পারে।

বেশি জ্বর হলে অনেক সময় রোগী প্রলাপ বকে। বাচ্চাদের বেলায় এ লক্ষণ বেশি দেখা যায়। শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হলে আমরা বলি জ্বর হয়েছে। মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস নামক অংশটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তবে, মেনিনজাইটিস বা এনকেফেলাইটিসে মস্তিষ্কের সংক্রমণ ঘটলে মস্তিষ্কের এই অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তখন শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে না। জ্বর বিপজ্জনক মাত্রায় চলে যেতে পারে।সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাইস আক্রান্ত না হলে শরীর তার তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রির বেশি উঠতে দেয় না।বেশি জ্বর এর কারণে খিচুনি হতে পারে বা রোগী হঠাৎ জ্ঞান হারাতে পারে। তবে, এসব কারণে সাধারণত কোনো স্থায়ী ক্ষতি হয় না।

অনেক সময় জ্বরের ঘোরে কেউ প্রলাপ বকে।বেশি জ্বরে তাপমাত্রা যাতে বেশি বাড়তে না পারে ,সে জন্য শরীর আত্মরক্ষার একটি উপায় হিসেবে খিঁচুনি, প্রলাপ বকা, সাময়িক জ্ঞান হারানো বা এ ধরনের কিছু লক্ষণ দেখায় বলে ধারণা করা হয়। এতে রোগীর সেবাদানকারীরা সতর্ক হয় এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে পারে।

জ্বর হলে শরীর দ্রুত পানিশূন্য হয়ে পড়ে। তাই প্রচুর পানি ও তরলজাতীয় খাবার খেতে হবে। নয়তো জিব শুকিয়ে যাবে। প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাবে বা গাঢ় হয়ে যাবে। তাই জ্বর হলে দিনে দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করুন।

জ্বর ১০৫ ডিগ্রির ওপর উঠে গেলে অনেক কাশি, পেটব্যথা, প্রস্রাবে জ্বালা, বেশি বমি হলে, জ্বরের ঘোরে অসংলগ্ন আচরণ করলে বা অচেতনের মতো হলে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া জরুরি। এক সপ্তাহের বেশি জ্বর থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ দরকার।

তথ্য: বিজ্ঞানের রাজ্যে রহস্যভেদ।