সাগরের অতলটা আসলে কেমন? খুবই গভীর, অন্ধকার একটা জগৎ। সাগরের প্রায় ২০০ মিটার নিচে কোন ধরনের আলো জ্বলে না। সেখানে কেবলই অন্ধকার, একদম নিকষ আঁধারের মত। যদি কোনো সাগরের গভীরতা কমপক্ষে গড়ে ১৪,০০০ ফিট হয়, তাহলে সেখানে আলোকিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কিন্তু তারপরও পানির নিচের জীবজগৎ রয়েছে আলোকিত হয়ে। কিভাবে?
পানি নিয়ে যারা গবেষণা করেন, অর্থাৎ মেরিন বায়োলজিস্টরা তাদের দেয়া নতুন একটি তথ্যে বলেছেন যে, সাগরের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ প্রাণী নিজেদের শরীরে আলো উৎপাদন করতে সক্ষম। অর্থাৎ, ৭৫% জলজ জীব বায়োলুমিনিসেন্ট (যারা প্রাকৃতিকভাবে নিজ দেহে আলো উৎপন্ন করতে সক্ষম)।
সায়েন্টিফিক রিপোর্ট নামক একটি জার্নালে এটি উল্লেখ করা হয় যে, সাগরের প্রাণীদের নিজ আলোয় আলোকিত হওয়া খুব নতুন কোনো ঘটনা নয়।
সেভেরিন মার্টিনি নামক একজন গবেষক বলেন, “আমি আসলে ঠিক জানি না সাধারণ মানুষ সমুদ্রের গভীরে প্রাণীদের আলোকিত হওয়াটিকে ঠিক কেমনভাবে নেবে। এটি এমন নয় যে কেবলমাত্র দু একটি প্রাণীর ক্ষেত্রে কথাটি খাটে। এংলার ফিশ, জেলীফিশ, ছোট ছোট ওয়ার্ম জাতীয় প্রাণী, স্কুইড- সব ধরণের প্রাণীর ক্ষেত্রেই এই উদাহরণটি উল্লেখযোগ্য। তারা সকলেই প্রাণীর নিচে নিজ আলোয় আলোকিত হয়।”
বায়োঅর্গানিজম যেগুলোর রয়েছে তারা ঔজ্জ্বল্যতার সাথে থাকে, কিন্তু তারা বেশ গভীরে অবস্থান করে। এই কারণে পূর্বের পরীক্ষাগুলোতে লাইট এমিটারস দ্বারা তাদের এই ঔজ্জ্বল্যের কোন রেকর্ড পাওয়া যায়নি। এমনকি অনেক ক্যামেরা সাহায্যেও তাদের স্থান নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি। মার্টিন বলেন, বেশিরভাগ জলজ জীব তাদের এই আলোটি নিভিয়ে রাখে। এর কারণ হচ্ছে নিজেকে আলোকিত করার মাধ্যমে অন্য কোন জীবের খোরাক বা শিকার হওয়ার ইচ্ছা কারোরই থাকে না। ঠিক এই কারণে, এই জলজ প্রাণীগুলো নিজেদের সাধারণভাবে রাখে। কিন্তু মূল ঘটনা হচ্ছে, সামুদ্রিক প্রাণীরা নিজেদের দেহকে আলোকিত করতে পারে।