Alvi Saadman

২৬ জানুয়ারি ২০২০ ১২:০০


বিভাগ: চিকিৎসাবিজ্ঞান

পড়ার সময়: ২ মিনিট


আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস: চাই সঠিক প্রতিকার


এ ভাইরাসটি একজন মানুষের দেহ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে দ্রুত ছড়াতে পারে। এ করোনাভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। সাধারণত ফ্লু বা ঠাণ্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে।

২০১৪ সালে ইবোলা ভাইরাস এক মহামারী আতঙ্ক ছড়িয়েছিলো মানুষের মনে। ২০১৫ সাল নাগাদ সেটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। গত বছর আমাদের দেশে ডেঙ্গু এবং নিউমোনিয়া অনেক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিলো। ২০২০ সালে নতুন আতঙ্কের নাম এখন করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসের আরেকটি প্রজাতি সার্স করোনাভাইরাসেও মানুষ মারা গেছিল। এবারের করোনাভাইরাসের নাম হলো নভেল করোনাভাইরাস। এ করোনা ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯-এনসিওভি। করোনা ভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি আছে। এর মধ্যে মাত্র ৭টি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে।

এই নোভেল করোনাভাইরাস ইতিমধ্যে চীনসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এর সংক্রমণের ফলে এ পর্যন্ত ৩০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর সংক্রমিত হয়েছে প্রায় ১৪ হাজারের বেশি লোক। এ ভাইরাস কিছুদিনের মধ্যে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে এমন আশংকাও রয়েছে।

এই ভাইরাসটি কোনো একটা প্রাণী থেকে মানুষের দেহে ঢুকেছে এবং একজন থেকে আরেকজনের দেহে ছড়াতে ছড়াতে আবার নিজের জিনগত গঠনে পরিবর্তন আনছে। কিন্তু এ ভাইরাসটির প্রকৃতি এবং কিভাবে তা রোধ করা যেতে পারে এ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা বিশদভাবে জানার চেষ্টা করছেন।

মনে করা হচ্ছে ইবোলার মতো প্রাণঘাতী নোভেল করোনাভাইরাস। তবে এটি নাকি ইবোলার চেয়েও অনেক বেশি বিপদজনক।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ করোনাভাইরাসটি মানুষের দেহকোষের ভেতরে ইতিমধ্যেই 'মিউটেট করছে' অর্থাৎ গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছে এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করছে। যার ফলে এটি বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

যেভাবে ছড়ায়

বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, এ ভাইরাসটি একজন মানুষের দেহ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে দ্রুত ছড়াতে পারে। এ করোনাভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। সাধারণত ফ্লু বা ঠাণ্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে।

লক্ষণ:

১) করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হলো শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।

২) এর সঙ্গে সঙ্গে থাকে জ্বর এবং কাশি।

৩) দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া।

৪) হতে পারে নিউমোনিয়া।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় পাঁচ দিন লাগে। প্রথম লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। তার পর দেখা দেয় শুকনো কাশি। এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট।

প্রতিকার

যেহেতু এই ভাইরাসটি নতুন, তাই এর কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো নেই এবং এমন কোনো চিকিৎসা নেই যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। তবে-

* রক্ষার একমাত্র উপায় হলো, যারা ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছে বা এ ভাইরাস বহন করছে- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।

* ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছেন বার বার হাত ধোয়া, হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা, ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক পরা।

* যদি অসুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে মাস্ক পরুন। নিজে অসুস্থ না হলেও অন্যের সংস্পর্শ এড়াতে মাস্ক পরুন। কেননা চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে এসে কমপক্ষে ১৫ জন চিকিৎসাকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন।

ভাইরাসটি এখন চীনের অন্যান্য শহর এবং চীনের বাইরে থাইল্যান্ড, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এক ব্যক্তির দেহে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে জানা গেছে।