যে কোনো মানুষেরই কথা বলার জন্য বাকযন্ত্র রয়েছে। এই বাক যন্ত্রের ভেতর দুটি পাতলা পর্দা থাকে। এদের স্বরতন্ত্রী বলে। স্বরতন্ত্রীর মধ্যে একটি সরু ছিদ্র থাকে। একে স্বরছিদ্র বলে। কথা বলার সময় ফুসফুস থেকে আগত বায়ুপ্রবাহ স্বরছিদ্র দিয়ে মুখ এবং নাকের ছিদ্রে প্রবাহিত হয়। ফলে স্বরতন্ত্রী দুটোতে কম্পন সৃষ্টি হয়। এদের কম্পনের ফলেই শব্দ সৃষ্টি হয়। স্বরতন্ত্রী দুটোর সাথে সংযুক্ত মাংশপেশীর সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে এদের উপর প্রযুক্ত টান নিয়ন্ত্রিত হয়ে কম্পন সংখ্যা পরিবর্তিত হয়। এভাবেই মানুষ বিভিন্ন সুরের বা কম্পাঙ্কের শব্দ সৃষ্টি করে।
প্রকৃতিগত ভাবেই ছেলেদের স্বরতন্ত্রী মেয়েদের তুলনায় অপেক্ষকৃত মোটা ও লম্বাটে। ফলে প্রতি সেকেন্ডে ছেলেদের স্বরতন্ত্রীর কম্পন মেয়েদের স্বরতন্ত্রীর কম্পনের তুলনায় অনেক কম হয়। এই কারণে ছেলেদের কন্ঠস্বর মেয়েদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত ভারী ও গম্ভীর। অন্যদিকে স্বরতন্ত্রী খাটো ও সরু হওয়ার কারণে মেয়েদের কণ্ঠস্বর ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি তীক্ষ্ণ ও চড়া হয়। এই কারণে ছেলে ও মেয়ের কণ্ঠস্বর ভিন্ন হয়ে থাকে।
অবশ্য অনেক মেয়ে আছে, যাদের কণ্ঠস্বর বেশ পুরুষালী ও মোটা। অন্যদিকে অনেক ছেলেও আছে যাদের কণ্ঠস্বর বেশ তীক্ষ্ণ ও চড়া ধরনের। এসব ছেলে ও মেয়েকে শুধু কণ্ঠস্বর দিয়ে চেনার উপায় থাকে না।
লেখক: অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়