বয়স হলে আমাদের চুলের রং ধূসর হয় কেন? চামড়াতেই বা কেন ভাঁজ পড়ে? অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোই বা কেন ভালোভাবে কাজ করতে পারে না?
বেশ কয়েকটি জৈবিক প্রক্রিয়ার কারণে এমনটা হয়ে থাকে৷
বয়স যখন কম থাকে, তখন কোষ বিভাজনের মাধ্যমে যে নতুন কোষগুলো তৈরি হয়, সেগুলোর মান ভালো থাকে৷ ফলে ডিএনএ-র ভাঙন কাটিয়ে ওঠা সহজ হয়৷
কিন্তু বয়স বাড়তে থাকলে বিভিন্ন কারণে ডিএনএ-তে ভাঙন বাড়তে থাকে৷ কোষের কার্যকারিতাও কমে যায়৷ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষেত্রেও তা ঘটে থাকে৷ হৃৎপিণ্ড ও পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে৷ ফুসফুসও ভালোভাবে কাজ করে না৷ লিভার আর কিডনি দুর্বল হতে থাকে৷ ফলে শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান সরানোর কাজটি আর ঠিকমতো হতে পারে না৷ হৃৎপিন্ড আর ফুসফসের শক্তি কমে যাওয়ায় পেশি ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঠিকমতো অক্সিজেন পায় না৷ পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় ব্যায়াম করতে কষ্ট হয়৷ দাঁতও পড়ে যায়৷
নিয়মিত খেলাধুলা করলে অবশ্য শরীরের এই অবস্থায় পৌঁছানো সময়টি একটু পেছানো যায়৷
বয়স বাড়তে থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়৷ ফলে সেই সময় অল্প সংখ্যক ‘কিলার সেল' তৈরি হয়৷ শরীরের জন্য ক্ষতিকর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, এমনকি ক্যানসারের জীবাণু ধ্বংস করে থাকে এই কিলার সেল৷
অর্থাৎ, কিলার সেলের সংখ্যা যত কমে, অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা তত বেড়ে যায়৷
তবে মস্তিষ্কের বয়স বাড়ার কিন্তু নিজস্ব প্রক্রিয়া আছে! সেখানে কোষ বিভাজনের ঘটনা বিরল৷ তবে মস্তিস্ক থেকে বার্তা প্রেরণের জন্য যে ‘সেমিওকেমিক্যাল' পদার্থগুলো থাকে, তার কার্যকারিতা কমে যায়৷ ফলে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব হয় না৷
তবে আশার কথা হচ্ছে, জটিল চিন্তার ক্ষেত্রে বয়স্কদের মস্তিস্ক অভিজ্ঞতার কারণে অল্পবয়সীদের চেয়ে ভালো কাজ করতে পারে৷